সপ্তাহ দু’য়েক হয়ে গেলো।
বাংলাদেশের বাইরে ইউরোপে’র বুকে বাংলাদেশীদের দ্বারা পরিচালিত সু-বিশাল প্রতিষ্টান ‘লন্ডন মুসলিম সেন্টার’-এর তৃতীয় তলায় একটি ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্টান।
যদিও সময় মতো বেরিয়েছি তথাপি পার্কিং খুঁজতে খুঁজতেই দেরী হয়ে যাওয়ায় অনুষ্টানে গিয়ে পৌঁছালাম ‘বাঙ্গালী টাইম’-এ।
অনুষ্টান শুরু হয়েছে ‘বৃটিশ টাইমে’ই… ছোটখাট গড়নের একজন ভদ্রলোক বক্তৃতা করছেন।
কিসব সাইয়েন্টিফিক টার্ম ব্যবহার করে সোলার হেলিকপ্টার-টপ্টার, সার্জিকাল রকেট-মকেটের বর্ণনা দিচ্ছিলেন।
একটি থিতু হয়ে বসতে বুঝলাম, এই লোক সাইজে ছোটখাটো হলে কি হবে… ইনি তো পদার্থ বিজ্ঞানের জগতে নতুন এক বিস্ফোরক !
উনার কথা-বার্তা, চিন্তা-ধারা অসাধারণ ! মুগ্ধ বিশ্ময়ে শুধু শুনেই যাচ্ছিলাম।
নিঃস্বন্দেহে বাংলাদেশের এই প্রতিভাবান বিজ্ঞানী সারাবিশ্বের জন্য একজন হিরার টুকরা ।
আর আজ খবরে দেখলাম, বিশ্বের প্রথম সোলার হেলিকপ্টার তৈরি করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী ড. হাসান শহীদ।
ভালোলাগাটা প্রকাশ করার ভাষাও খুঁজে পাচ্ছিনা।
তারপরেই মঞ্চে উঠলেন নির্যাতিত-নিপীড়িত-মহামারি আক্রান্ত বিশ্বের আকাশে জ্বলজ্বল করে জ্বলা বাংলাদেশের আরেক নক্ষত্র ব্যারিষ্টার হামিদ হোসাইন আজাদ।(এ্যাসিস্টেন্ট সিইও-মুসলিম এইড)
হামিদ আজাদ ভাই-ও তার বিশ্ময় লুকিয়ে রাখতে পারেননি !
ড. হাসান শহীদের সাফল্য কামনার পাশাপাশি বিশ্ব-মানবতার জন্য তাঁর এই মহতী চিন্তাকে সাধুবাদ জানালেন।দোয়া করলেন তাঁর জন্য।
বিশেষ করে তার ‘ক্যাপসুল রকেটে’র আশু উদ্ভাবন কামনা করলেন, দোয়া করলেন মানবতার কল্যানে তাঁর এই অবদান ম্যডিক্যাল সায়েন্সের জগতে যেনো মাইলফলক হয়ে থাকে।
(এই রকেট নাকি দেখতে হবে ক্যাপসুলের মতো যা গিলে ফেললে আমাদের ভেতরের সব নাড়ি-ভুড়ি-যন্ত্রপাতির ছবি তুলে পাঠিয়ে দেবে যা ক্যান্সার নিরাময়ে সহায়তা করবে।কাজ শেষে নাকি আপনা আপনি বাকি সব বর্জ্যের সাথে স্ব-রাস্তায় বেরিয়ে যাবে !!
আমিতো একেবারে হাঁ, বলে কি ?… কি আ-জ-ব চিন্তারে বাবা !)
ইতিমধ্যে মাগরীবের আযান হয়ে যাওয়ায় ওযু করতে গ্রাউন্ড ফ্লোরে যাচ্ছি, পাশাপাশি হাঁটছেন বিজ্ঞানী ড. হাসান শহীদ।আর, আমার ভাবনার জগতে খেলে যাচ্ছে তালগোল পাকানো অদ্ভুত-দূর্বোধ্য কিছু একটা।
এখনো বুঝে উঠতে পারছিনা তার এই অসাধারণ উদ্ভাবনী আইডিয়ার কথা !
না-পেরে উঠতে নিজেকে বুঝালাম, বিজ্ঞানীরা এমনই হয় … আউলা-জাউলা !
পেশাগত কারনে আমাকে বিশ্বের অনেক দেশের মানুষের সাথেই মিশতে হয়; সেদিন কথা হচ্ছিলো একজন অষ্ট্রেলিয়ান হাই-কমিশনারের সাথে… প্রসঙ্গক্রমে ভদ্রলোক জানতে চাইলে আমার অরিজিন কোন দেশে।
বাংলাদেশের নাম বলাতে খুবই আফসোস করলেন সাভারের ঘটনাটি নিয়ে। অসন্তোষ প্রকাশ করলেন মানবতার এমন দুরাবস্থা দেখে।
ভারী মন নিয়ে শুধু বলতে পেরেছিলাম… আমরা, সাধারণ বাংলাদেশীরা অনেক ভালো। অনেক সহজ-সরল-অথিতিপরায়ন আর নির্ভেজাল।
শুধু আমাদের কপালটাই খারাপ, বার বার মিরজাফর আর ঘসেটি বেগমেরা আমাদের ভাগ্য নিয়ে লুফালুফি করে।
আজ, শত কষ্টের মাঝেও মনটা অনেক ভালো হয়ে গেছে।
গর্বে বুকটা ফুলে উঠছে আমাদের এই ভাইটির জন্য।বিজ্ঞানী ড. হাসান শহীদ শুধু কুইন ম্যরীর’ই সম্পদ নন… তিনি আমাদের, বাংলাদেশের।তিনি সারা বিশ্বের।
একটি সুন্দর পরিবেশ পেলে আমরাও যে পারি, বিজ্ঞানী ড. হাসান শহীদ তার উৎকৃষ্ট এক উদাহরণ।