Skip navigation

মানচিত্রের স্বাধীনতায় কি হবে যদি আমি পরাধীন থাকি আপন ঘরেই !!

ফেলানীর লাশটা কাঁটাতারে ঝুলে গেলো… হলুদ মিডিয়ার ফাঁক-ফোকর গলে হলেও বেরিয়ে এলো খবরটা।
ইন্ডিয়ার চৌদ্দগোষ্টি উদ্ধার করতে শুর করলাম আমরা। সাইবার দুনিয়ায় ঝড় উঠলো, আবার যথারীতি পদার্থের নিয়মানুসারে অবস্থা গরম থেকে ঠান্ডার দিকে গতি পাল্টালো।
যে অমানুষ-টা ফেলানীকে হত্যা করলো, তাকে ইন্ডিয়ান আদালত বেকসুর খালাস দিলো।
আর যায় কই, আমরা আবার দেখাতে শুরু করলাম দেশপ্রেম আর স্বার্বভৌম-চেতনা’র চরম পরাকাষ্টা।
এটা ঠিক যে আমাদের আন্তরিকতায় কোন খাদ নেই, আমাদের আবেগে কোন কমতি নেই।
আমরা শুধু ঘোলা না হওয়া পর্যন্ত পানিটা খাইনা… এই যা, আমাদের স্বভাব।
এই আমিও তার ব্যতিক্রম নই।
এক ফেলানীকে নিয়ে আজ আমরা এতোটা সচেতন হয়ে উঠেছি হয়তোবা তার খবরটা মিডিয়ায় এসেছিলো বলেই। এভাবে কতো শতো ফেলানী, তার বাপ-ভাই, মা-বোন দিনের পর দিন শিকার হচ্ছে ভারতীয় আগ্রাসনের তার কতোটাই বা আমরা জানতে পারি ! পাখির মতো গুলি করে মানুষ মারা BSF’র জন্য এখনতো ডাল-ভাত ব্যাপার।
যে BDR’কে ওরা বাঘেরে মতো ভয় করতো সেই BDR-কে আমরা মেরুদন্ডহীন, ঢাল-তলোয়ার বিহীন নিধিরাম সর্দারের বাহিনীতে পরিণত করেছি। ওরা আমাদের মারবেনা, তো অঙ্গুল চুষবে ?
আপনি আমি ঠিক যে মুহুর্তে সাইবার স্পেসে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি, ঠিক সেই মুহুর্তেই হয়তো আপনার-আমার ভাবী আর বোন এক অন্য যুদ্ধে ব্যস্ত, তারা হয়তো ঠিক এখনই টিভির রিমোট নিয়ে টানাটানি-মারামারি করছে ইন্ডিয়ান সিরিয়াল দেখবে বলে।
যুদ্ধ আমাদের চালিয়ে যেতেই হবে, তবে তার শুরুটা করতে হবে ঘর থেকেই।
আমার ঘর বেদখল হয়ে গেলে, সাইবার স্পেস আর বর্ডার দিয়ে আমি কি করবো ? গুলে পানি খাবো ?
এই সব আবেগ আর আন্তরিকতা গুলে খাওয়ার মতো পানিও তখন পাওয়া যাবেনা, উজানের সব নদীতে ওরা বাঁধ দিয়ে রেখেছে অনেক আগেই।
ওরা আমাদের পানিতে মারছে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চাকুরীতে মারছে, বর্ডারে গুলি করে মারছে, পোষাক রপ্তানিতে মারছে, মারছে রাজনীতিতে… আমাদের বুকের উপর দিয়ে ওরা চালিয়ে যাচ্ছে ১০০ চাক্কার ট্রাক !
সবচেয়ে বড় ‘মাইর’টা মারছে ওদের নোংরা সংস্কৃতির মাধ্যমে।আর, আমাদের মহিলারা গোগ্রাসে গিলছেন ওদের উচ্ছিষ্ট সব অখাদ্য-কুখাদ্য, শিখছেন কুটনামী সব কু-সংস্কার।
আমাদেরকে উপলব্দি করতে হবে, ওরা আমাদের ঘরে আক্রমন করেছে। মহামারীর মতো ছড়িয়ে দিচ্ছে মঙ্গল-প্রদীপ জ্বালানো, উল্কি আঁকা কিংবা মুর্তিপূজার মতো অসার আহম্মকী সব অপসংস্কৃতি।
ফেলানীর আত্মা তখনি শান্তি পাবে, যখন আমরা আসলে স্বাধীন হতে পারবো আমাদের মগজে-মননে আর চিন্তায়।
সীমানার সার্বভৌমত্বে আর মানচিত্রের স্বাধীনতায় কি হবে যদি আমি পরাধীন থাকি আপন ঘরেই !!

আমরাও পারি...

সপ্তাহ দু’য়েক হয়ে গেলো।
বাংলাদেশের বাইরে ইউরোপে’র বুকে বাংলাদেশীদের দ্বারা পরিচালিত সু-বিশাল প্রতিষ্টান ‘লন্ডন মুসলিম সেন্টার’-এর তৃতীয় তলায় একটি ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্টান।
যদিও সময় মতো বেরিয়েছি তথাপি পার্কিং খুঁজতে খুঁজতেই দেরী হয়ে যাওয়ায় অনুষ্টানে গিয়ে পৌঁছালাম ‘বাঙ্গালী টাইম’-এ।
অনুষ্টান শুরু হয়েছে ‘বৃটিশ টাইমে’ই… ছোটখাট গড়নের একজন ভদ্রলোক বক্তৃতা করছেন।
কিসব সাইয়েন্টিফিক টার্ম ব্যবহার করে সোলার হেলিকপ্টার-টপ্টার, সার্জিকাল রকেট-মকেটের বর্ণনা দিচ্ছিলেন।
একটি থিতু হয়ে বসতে বুঝলাম, এই লোক সাইজে ছোটখাটো হলে কি হবে… ইনি তো পদার্থ বিজ্ঞানের জগতে নতুন এক বিস্ফোরক !
উনার কথা-বার্তা, চিন্তা-ধারা অসাধারণ ! মুগ্ধ বিশ্ময়ে শুধু শুনেই যাচ্ছিলাম।
নিঃস্বন্দেহে বাংলাদেশের এই প্রতিভাবান বিজ্ঞানী সারাবিশ্বের জন্য একজন হিরার টুকরা ।
আর আজ খবরে দেখলাম, বিশ্বের প্রথম সোলার হেলিকপ্টার তৈরি করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী ড. হাসান শহীদ।
ভালোলাগাটা প্রকাশ করার ভাষাও খুঁজে পাচ্ছিনা।

তারপরেই মঞ্চে উঠলেন নির্যাতিত-নিপীড়িত-মহামারি আক্রান্ত বিশ্বের আকাশে জ্বলজ্বল করে জ্বলা বাংলাদেশের আরেক নক্ষত্র ব্যারিষ্টার হামিদ হোসাইন আজাদ।(এ্যাসিস্টেন্ট সিইও-মুসলিম এইড)
হামিদ আজাদ ভাই-ও তার বিশ্ময় লুকিয়ে রাখতে পারেননি !
ড. হাসান শহীদের সাফল্য কামনার পাশাপাশি বিশ্ব-মানবতার জন্য তাঁর এই মহতী চিন্তাকে সাধুবাদ জানালেন।দোয়া করলেন তাঁর জন্য।
বিশেষ করে তার ‘ক্যাপসুল রকেটে’র আশু উদ্ভাবন কামনা করলেন, দোয়া করলেন মানবতার কল্যানে তাঁর এই অবদান ম্যডিক্যাল সায়েন্সের জগতে যেনো মাইলফলক হয়ে থাকে।
(এই রকেট নাকি দেখতে হবে ক্যাপসুলের মতো যা গিলে ফেললে আমাদের ভেতরের সব নাড়ি-ভুড়ি-যন্ত্রপাতির ছবি তুলে পাঠিয়ে দেবে যা ক্যান্সার নিরাময়ে সহায়তা করবে।কাজ শেষে নাকি আপনা আপনি বাকি সব বর্জ্যের সাথে স্ব-রাস্তায় বেরিয়ে যাবে !!
আমিতো একেবারে হাঁ, বলে কি ?… কি আ-জ-ব চিন্তারে বাবা !)

ইতিমধ্যে মাগরীবের আযান হয়ে যাওয়ায় ওযু করতে গ্রাউন্ড ফ্লোরে যাচ্ছি, পাশাপাশি হাঁটছেন বিজ্ঞানী ড. হাসান শহীদ।আর, আমার ভাবনার জগতে খেলে যাচ্ছে তালগোল পাকানো অদ্ভুত-দূর্বোধ্য কিছু একটা।
এখনো বুঝে উঠতে পারছিনা তার এই অসাধারণ উদ্ভাবনী আইডিয়ার কথা !
না-পেরে উঠতে নিজেকে বুঝালাম, বিজ্ঞানীরা এমনই হয় … আউলা-জাউলা !

পেশাগত কারনে আমাকে বিশ্বের অনেক দেশের মানুষের সাথেই মিশতে হয়; সেদিন কথা হচ্ছিলো একজন অষ্ট্রেলিয়ান হাই-কমিশনারের সাথে… প্রসঙ্গক্রমে ভদ্রলোক জানতে চাইলে আমার অরিজিন কোন দেশে।
বাংলাদেশের নাম বলাতে খুবই আফসোস করলেন সাভারের ঘটনাটি নিয়ে। অসন্তোষ প্রকাশ করলেন মানবতার এমন দুরাবস্থা দেখে।
ভারী মন নিয়ে শুধু বলতে পেরেছিলাম… আমরা, সাধারণ বাংলাদেশীরা অনেক ভালো। অনেক সহজ-সরল-অথিতিপরায়ন আর নির্ভেজাল।
শুধু আমাদের কপালটাই খারাপ, বার বার মিরজাফর আর ঘসেটি বেগমেরা আমাদের ভাগ্য নিয়ে লুফালুফি করে।

আজ, শত কষ্টের মাঝেও মনটা অনেক ভালো হয়ে গেছে।
গর্বে বুকটা ফুলে উঠছে আমাদের এই ভাইটির জন্য।বিজ্ঞানী ড. হাসান শহীদ শুধু কুইন ম্যরীর’ই সম্পদ নন… তিনি আমাদের, বাংলাদেশের।তিনি সারা বিশ্বের।

একটি সুন্দর পরিবেশ পেলে আমরাও যে পারি, বিজ্ঞানী ড. হাসান শহীদ তার উৎকৃষ্ট এক উদাহরণ।

আমি বাংলায় কথা বলি,
আমি বাংলায় স্বপ্ন দেখি।
আমি বাংলায় রাগ করি, আমি বাংলায় ভালোবাসি।
অফিসে ভীন-ভাষায় কথা বললেও,
আমি মনে-মনে বাংলায়’ই হিসেব-নিকেষ কষি।
আমি বাংলাদেশের মাটি ফুঁড়ে বেরোনো লতা-গুল্মের সমান্তরালে বেড়ে উঠেছি।
আমার রক্ত-মাংস, আপাদমস্তক বাংলা।
আমার চৌদ্দ-পুরুষ কথা বলে বাংলায়।
আমার উচ্চারণ বাংলা, আমার অভিমান বাংলা, আমার প্রার্থনা বাংলা।

তারপরো, আমি বাঙ্গালী নই !!
কেননা,
আমার গাল ভর্তি দাঁড়ি আছে।
আমি মাথায় টুপি পরি।
আমি মসজিদে যাই।
আমার মা-বোনেরা খোসা-বিহীন কলার মতো ঘুরে বেড়ায়না পথে-ঘাটে-বাজারে।
ওরা হিজাব পরে।

তারপরো, আমি বাঙ্গালী নই !!
কেননা,
আমার ইয়া মোটা গোঁফ নেই।
আমার বোনের কপালে হ্যালিপাডের চাইতেও বড় একটা লাল টিঁপ নেই।
আমার ভাইটা নিষিদ্ধ তরলে বুঁদ হয়ে নাচেনা ন্যাংটা-খ্যামটা।

এমন বাঙ্গালী আমি হতেই চাইনা।
থুঁ-থুঁ মারি তর লাল টিঁপে।
থাপ্পড় মারি তর এমন উজবুক ‘বাঙ্গালী’ – সংজ্ঞায় !!

 

ঈদের খুশী’র মাঝে মন-খারাপ করা কথা বলতে চাইনা।
কিন্তু, কি করবো এতো কান্নার মাঝে ঈদের খুশীও যে খুশীর হয়না !

ঈদের জামাত শেষে ইমাম সাহেব যখন খুতবা দিচ্ছিলেন, একাগ্র মনে ভাবছিলাম গোটা মুসলিম উম্মাহর কথা…
আর ঠিক সেই মুহুর্তেই ঈমাম সাহেব ব্যখা করছিলেন কিভাবে রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘সারা মুসলিম মিল্লাত একটি দেহের ন্যায়’।
এর যে কোন অংশে আঘাত লাগলে পুরো শরীরটাই ব্যথিত হওয়ার কথা।
অজান্তেই ভিজে উঠলো আমার এই পাষাণ চোখ দুটোও।

বাংলাদেশ –
আমার প্রিয় জন্মভুমি, আজ ৫৬ হাজার বর্গ-মাইলের আস্ত একটা জেলখানায় পরিণত হয়েছে।
হাত-পা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে এমন লোকের সংখ্যাধিক্যে হাসপাতালেও আর জায়গা নেই।
শুধু কোনরকমে প্রাণ নিয়ে থাকার নিরাপত্তাটুকুও নেই।
নেই অপঘাত-নির্যাতনে না-মরার নিশ্চয়তাটুকু।
এই দেশে নেই স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টিও।
জালিমের খড়গহস্তবিহীন একটি সোনার দেশের স্বপ্ন দেখাও এখানে আজ অপরাধ।
সততা এখানে আজ সবচেয়ে বড় দুর্বলতা।
সরলতা আজ এখানে সবচেয়ে বড় অপরাধ।
এ কোন স্বাধীন দেশে বাস করছি আমরা !
শাহজালাল, শাহপরান, শরীয়তুল্লাহ, খাঁন জাহান আলী কিংবা তীতুমিরের মতো মহা-পুরুষদের পদভারে যে দেশের মাটি হয়েছে পবিত্র, সে দেশের আনাচে-কানাচে আজ শেয়াল-শকুনের কামড়-কামড়ি, আর তার ভয়ংকর উন্মত্ত উল্লাস।
বমি উদ্রেককারী আশ্লীলতা আর বেলেল্লা নোংরামীর গন্ধে বাংলাদেশের আকাশ-বাতাস আজ বিষাক্ত।
এখানে ঈদের খূশী কোথায় ?!

আজ মিশরীয়দের ঈদ মানে রাস্তায় শাহাদাতের নাজরানা পেশ করা।
ফেরাউনের প্রেত্মারা গোটা মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে মেতে উঠেছে এক ভয়ঙ্কর আত্মঘাতি খেলায় যার নির্মম বলি হচ্ছে ইসলামপ্রিয় মানুষগুলো।
আজ এই ঈদের দিনে বার বার শুধু সেই ভাইটির কথা মনে পড়ছে, যে রোজা অবস্থায় রক্তের নদীতে হাবুডুবু খাচ্ছে তবুও এক ফোঁটা পানি পান করতে চায়নি জান্নাতে গিয়ে ইফতার করবে বলে…
যে ভাইটি আমার এভাবে চলে গেলো ইফতার না করেই শাহাদাতের আতর মেখে, সে ভাইটির দেখা ইসলামী রাষ্ট্রের স্বপ্ন এখনো যখন রাস্তায় গড়াগড়ি খাচ্ছে… ঠিক সে মুহুর্তে আমি ঈদের খুশিতে মাতোয়ারা হই কি করে ?

আজ আপাদমস্তক রক্তাক্ত হয়ে আছে ফিলিস্তিনের ফেরেস্তার মতো একেকটা বাচ্চা ।
গাজা’র মাটিতে আমার মা-বোনের ইজ্জত-আব্রু রক্ষার গায়ের কাপড়টুকু নিয়েও টানাটানি করছে হায়েনার দল।
প্রতিদিন টিটকারি আর পশুসুলভ দুরাচারের শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার মা-বোন।
প্রতি-মুহুর্তে আকাশ থেকে বৃষ্টির বদলে মারাত্মক সব রাসায়নিক বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে নিরীহ এই জনপদের উপর।
আজকের এই ঈদের দিনে ফিলিস্তিনের ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট সব দুমড়ে-মুচড়ে আবর্জনার স্তুপ হয়ে আছে।
আধমরা মানুষগুলো গুলির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে প্রতিনিয়ত…
এই ইদের দিনেও।

সিরিয়ার মুসমানেরা ঈদ করছে মাটির নীচে লুকিয়ে, কোন রকম প্রাণ বাঁচিয়ে।
অবিরাম বোমা বৃষ্টির মাঝে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে পরিবার আর সমাজ থেকে।
দিক্বিদিক ছুটে বেড়াচ্ছে শান্তিপ্রিয় আদমসন্তানেরা।
বিশ্ব-রাজনীতির কাছে অসহায়-নিরুপায় এক জনগষ্টিতে পরিনত হচ্ছে মুসলিম সম্প্রদায়।

মায়ানমারের মুসলিমরা আজ কে কোথায় আছে, কেউ জানেনা।
যে কয়জন জীবিত আছে, পৈতৃক প্রাণটুকু বাঁচাতে তারাও আজ পালিয়ে বেড়াচ্ছে পাহাড়-জংগলে, বনে-বাদাড়ে।
মা-বাপ, বউ-সন্তান কেউ কারো কাছে নেই।
জ্বালিয়ে দেয়া লাশগুলো ভাসছে বঙ্গোপসাগরে।
পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশে পালিয়ে বাঁচার সুযোগটুকুও আর নেই !
হায়রে মানবতা !
এই হচ্ছে আরাকান বাসীদের আজকের ঈদ !

দুনিয়ার বুকে যেনো একটুকরা বেহেসত… ‘ভূ-স্বর্গ’ খ্যাত কাশ্মীর।
সেই কাশ্মীরকে আজ দোযখে পরিণত করেছে ব্রাম্মন্যবাদীরা।
আমার মা-বোনদের ইজ্জত নিয়ে খেল-তামাসা হচ্ছে রাস্তা-ঘাটে।
স্বাধীন দেশেই পরাধীন হয়ে আছে এই ভু-খন্ডের মুসলামানেরা।
কতো শত মা আজকের এই ঈদের দিনটা শুধু কেঁদেই পার করে দেবেন তার হারিয়ে যাওয়া তরতাজা প্রাণ ছেলের জন্য।
কতো শত বাপ আজ অসহায় আকুতি নিয়ে, মজলুমের হাত তুলে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করবেন তার মেয়ের ইজ্জতের হেফাজতের জন্য।
আজকের এই ঈদের দিনে।
তারপরও আমার ঈদ খুশী’র হবে কিভাবে?

বসনিয়া কিংবা আলজেরিয়ার মুসলিমরা আজ ঈদ করবে লাখ-লাখ প্রিয়জন হারানোর বেদনা বুকে নিয়ে।
সিক্ত চোখে… রিক্ত প্রাণে।
বুকটা খালি হয়ে আছে কতো লক্ষ-লক্ষ মা-বাবা’র।
কতোশত ভাই-বোন ঈদ করবে তার আপন ভাই কিংবা বোনটিকে ছাড়া।

মিন্দানাও’য়ের ভাই-বোনেরা আজ আরশে আজিমের পানে তাকিয়ে শুধু বোবা কান্নাই কাঁদছে…
কি করে আমার ঈদের খুশি পূর্ণ হবে ? আমার ভাই-বোনেরা যে মরছেই প্রতিদিন, মার খেয়েই যাচ্ছে হরদম।

তিউনিসিয়া, তুরস্ক, আফগানিস্থান, ইরাক, সোমালিয়া, সুদান, আরাকান, লেবানন, পূর্ব-তিমুর’সহ কতো জায়গা থেকে আজ শুধুই ভেসে আসছে লাশের গন্ধ, হারানোর বেদনা, মজলুমের আহাজারি আর নির্যাতিতের করুন আর্তনাদ !

আমার কানের পাশে বাচ্চা শিশুর ভীত-সন্ত্রস্ত ফোঁপানীর আওয়াজ।
আমার দুঃস্বপ্নে ধর্ষিতা-নিস্পেষিতা বোনের কলজে-ছেঁড়া অসহায় গোঁঙ্গানি…
আমি স্থির থাকি কি করে !
তারপরও আমি বিলাসী ঈদ কি করে উদযাপন করি ?

এতো কান্নার শব্দে আমার ঘুম আসেনা।
এতো আর্তনাদ আর করুণ আকুতি আমাকে শান্ত থাকতে দেয়না।
এতো অবিচার, এতো আহাজারি আমায় স্বাভাবিক চিন্তার নিশ্চয়তা দিতে পারেনা।

আর কেউ পারলেও আমি এই ঈদের দিনে আনন্দ করতে পারিনা !!

-হাসান শাহীন
০৯/০৮/২০১৩

কেউ যদি তার সমস্যার কথাগুলো আপনার সাথে শেয়ার করতে চায় বা আপনাকে শুনায়, তার মানে এই নয় সে আপনার সাহায্য চাইছে বা কোন অভিযোগ করছে।
তার মানে হচ্ছে, সে আসলে আপনাকে বিশ্বাস করছে… আপনার কাছে নিজেকে নির্দ্ধিধায় প্রকাশ করতে পারছে।
বিশেষ করে, একটি মেয়ে যখন আপনাকে তার কথাগুলো বলতে চায় সে আসলে আপনাকে অনেক সম্মান করে বলেই এমন করে।
মেয়েরা সাধারনতঃ বুকের কথা বুকেই পুষে রাখে। কিন্তু যখন মুখে ফুটায় তখন নিতান্ত অপারগ হয়ে তা করে থাকে।আর, যে মানুষটির কাছে মেয়েরা মুখ ফুটায় সে মানুষটি তাদের কাছে অনেক বেশী ভালোবাসা আর সম্মানের হয় বলেই তা করতে পারে।
আপনি যদি হোন এমন কারো কেউ, শ্রদ্ধাশীল হোন সে মানূষটির প্রতি।আপনার হয়তো সে কেউ না, কিন্তু আপনি হয়তো তার অনেক কিছু।
অন্যের গোপনীয় বা ব্যক্তিগত কিছু আপনার জানা থাকলে তার হেফাজত করুন।একজন মানুষকে আরেকজন মানুষের কাছে হেয় করার মাঝে কোন বড়ত্ব নেই, বরং এটা মানুষের সত্বারই অপমান।নিজেকে অন্যের অবস্থানে রেখে, যাচাই করতে শিখুন।আরেকজন মানুষের কাছে বিশ্বস্ত হতে পারাটা আসলে অনেক বড় এক পাওয়া।
১১।০১।১৩

অফিস থেকে হেঁঠেই ফিরছি বাসায় ।
প্রায়ই এমনটা করি, ভাড়াটা সাশ্রয় হয় আর হালকা ব্যায়ামও হয়ে যায়।
ক্লান্ত লাগছিলো খুব, বয়সের ভার। পার্কের বেঞ্চেই বসে পড়লাম। পার্শ্বস্থ ময়লা ফেলার বিনটি যেনো বমি করছে, গলা পর্যন্ত ভরে আছে মানুষ নামক সর্ব-খাদকের উচ্ছিষ্টে।মনে হচ্ছিলো, বিনটা ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে আছে আদম সন্তানের উপর। এহেন অত্যাচার বুজি জড় পদার্থের প্রাণে(?)ও সইছে না।

আমরা-মানুষেরা,যতটা না খাই তারচেয়ে বেশী নষ্ট করি।কারো কারো ভুঁড়ি ঠেকে আকাশে আর কারো কারো পিঠের সাথে লেপ্টে থাকে পেটের চামড়া। সে সব কথা নাহয় নাইবা বললাম আজ……

এই যে এতো উচ্ছিষ্ট আর আবর্জনা আমরা সৃষ্টি করি প্রতিদিন, এই যে এতো সব দূষন করি প্রকৃতির… এর শেষ কোথায় ? পরবর্তি প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যাওয়াটাতো আমাদের মানবিক দায়িত্ব।

সম্পদের সীমিত ব্যাবহার,পরিমিত ব্যয়, আর সুসম বন্টনের মাধ্যমেই ভারসাম্যপুর্ণ আর পরিচ্ছন্ন একটি পৃথিবী গড়া সম্ভব।

আমার নিজেকে পরিবর্তনের মাধ্যমেই এই যাত্রার শুরু করা দরকার। আত্ম-সচেতনতায় যেনো আমরা সবাই অন্ততঃ পালন করে যেতে পারি নিজেদের দায়িত্বটুকু।
—————————————————————————–
সবিনয় একটি অনুরুধঃ আসুন সকলে মিলে পানির অপচয় রোধে একটু সচেতন হই। প্রকৃতির এমন এক অশেষ নেয়ামাতের কদর করা আজকের সময়ের এক অপরিহার্য দাবী।
22/11/12
Image

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্‌ বলেছেন, “তাদের উপর যখন বিপদ আপতিত হয় তখন বলে, আমরা আল্লাহ্‌রই এবং আমরা তাঁরই নিকট ফিরে যাব । ঐ সকল লোকদের প্রতিই রবের পক্ষ হতে শান্তি ও করুণা, আর তারাই হেদায়েত প্রাপ্ত” । সূরা